আধুনিক বিজ্ঞানীগণ পৃথিবীর ইতিহাসকে
নিম্নবর্ণিত প্রধান চারটি ভাগে বিভক্ত করেন।
১. Pre-Cambrian যুগ
৬০০০ থেকে ৩৩০০ মিলিয়ন
বছর। এই যুগে পৃথিবী তার আদি পিন্ড থেকে বিকশিত
হয় এবং একটি স্বতন্ত্র গ্রহের রূপ ধারন করে। জীবনের প্রাচুর্য ও বৈচিত্র্যের মাধ্যমে এ যুগের পরিসমাপ্তি ঘটে।
২. Paleozoic যুগ
২৩০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন
বছর। এই যুগে সর্বপ্রথম ভূমিজ লতা-পাতা, উভচর প্রাণী ও সরীসৃপ দৃষ্টিগোচর হয়। এটি হল প্রাচীন প্রাণ যুগ।
৩. Mesozoic যুগ
৬৩ থেকে ২৩০ মিলিয়ন
বছর। এটিকে মধ্যপ্রাণ যুগ বলে বিবেচনা করা হয়। মৌসুমী পরিবর্তনের সঙ্গে বৃক্ষ-লতা ভালভাবে
খাপ খেয়ে গিয়েছিল। মেরুদন্ডী প্রাণী, স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং পাখিও এ যুগে গোচরীভূত হয়। আর ডাইনোসর ছিল প্রচুর।
৪. Conozoic যুগ
বর্তমান সময় থেকে ৬৩
মিলিয়ন বছর। এই যুগ জীবনের বর্তমান ধাপকে অন্তর্ভুক্ত
করে।
পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক
ইতিহাসকে এই চার ভাগে বিভাজন অবিন্যস্ত কিংবা বিশৃঙ্খল নয়, বরং তা করা হয়েছে দৈহিক গঠন প্রক্রিয়ার বিকাশের সাক্ষ্যের
ওপর ভিত্তি করে। এই যুগগুলি বিশ্ব বিস্তৃত পারস্পরিক সম্পর্কের
ভিত্তি হিসেবে সার্বজনীনভাবে গৃহীত হয়েছে। এগুলি প্রাণীজগৎ ও উদ্ভিদজগতের উন্নতি এবং মহাদেশগুলির গতিপ্রবাহ, মহাসাগর ও পর্বত-মালার রূপ পরিবর্তনের রেকর্ডেরও প্রতিনিধিত্ব করে। এটিই সম্ভবত সেই চার যুগ যা কুরআন মাজিদ বর্ণনা করে।
وَجَعَلَ فِيهَا
رَوَاسِيَ مِنْ فَوْقِهَا وَبَارَكَ فِيهَا وَقَدَّرَ فِيهَا أَقْوَاتَهَا فِي
أَرْبَعَةِ أَيَّامٍ سَوَاءً لِلسَّائِلِين
তিনি পৃথিবীতে উপরিভাগে
অটল পর্বতমালা স্থাপন করেছেন, তাতে কল্যাণ নিহিত
রেখেছেন এবং চার দিনের মধ্যে তাতে তার খাদ্যের ব্যবস্থা করেছেন, তাদের জন্যে (তথ্যস্বরূপ) যারা জিজ্ঞাসা করে। (ফুসসিলাত, ৪১ : ১০)
এখানে ‘ইয়ম’-এর স্থলে ‘আইয়াম’ শব্দটি ব্যবহৃত হয়েছে, যেটি দ্বারা কাল
বা যুগ (অনির্দিষ্ট সময়) বুঝায়।
লক্ষণীয় যে, পৃথিবীর ভূতাত্ত্বিক ইতিহাসের এই চারটি সময়কাল আকাশ, পৃথিবী ও পুরো মহাবিশ্ব সৃষ্টির ছয় সময়কাল থেকে ভিন্ন। সেগুলি অতীত হয়ে গেছে আজ প্রায় ১৩৭৫ কোটি বছর। অথচ পৃথিবীর বয়স মাত্র ৪৫৭ কোটি বছর!
ফাইয়াজ আল-মুহাইমিন
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন