মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০১৪

বিগ ব্যাং থিওরি এবং পৃথিবী সৃষ্টি


কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা মোটামুটি নিশ্চিত যে, এই প্রাকৃতিক মহাবিশ্বের একটা শুরু আছেতাঁরা আরো নিশ্চিত যে, এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারণ করছেবিষয় দুটি আসলে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত সম্প্রসারণ করছে বলেই শুরু আছেঅর্থাৎ এমন একটা সময় ছিল যখন এই মহাবিশ্ব বর্তমান অবস্থায় ছিল না কুরআন বলছে-

بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَإِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
তিনি আকাশমন্ডলী ও জমিনকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী; তিনি যখন কিছু করতে চান তখন সেটিকে বলেন, হয়ে যাও অমনি তা হয়ে যায় (বাকারা ১১৭)

إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
বস্তুত তাঁর সৃষ্টিকার্য এরূপ যে, যখন তিনি কিছু সৃষ্টি করতে ইচ্ছে করেন, তখন তিনি তাকে বলেন, ‘হও’, অমনি তা হয়ে যায়। (ইয়া-সীন ৮২)
তাহলে দেখা যাচ্ছে যে, কোরআন অনুযায়ীও এই মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে অর্থাৎ এই মহাবিশ্বকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আসা হয়েছে, তা পরম শূন্যথেকে হোক বা অন্য যেকোনো ভাবেই হোক না কেনউপরোল্লেখিত আয়াতে উল্লেখিত ‘Be’ কম্যান্ডমেন্টকে ‘Big Bang’ এর সাথে অত্যন্ত যৌক্তিক ভাবেই তুলনা করা যেতে পারেঅর্থাৎ মহাবিশ্বের শুরুর মুহূর্তবিজ্ঞানীরা যেমন বছরের পর বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে সুইচ টিপেকৃত্রিম বিগ ব্যাং শুরু করতে যাচ্ছেন এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা ‘Be’ কম্যান্ডমেন্ট এর মাধ্যমে আজ থেকে প্রায় পনের বিলিয়ন বছর আগে বাস্তব বিগ ব্যাং শুরু করেছিলেনকেউ কেউ আবার এই ‘Be’ কম্যান্ডমেন্টকে নিয়ে বেশ কৌতুক করার চেষ্টা করেকারো মধ্যে সামান্যতম সাধারণ বোধ বলে কিছু থাকলে এই বিষয়টা নিয়ে কৌতুক করার আগে দুবার করে ভেবে দেখা উচিতঅনস্তিত্ব থেকে কোনো কিছুকে অস্তিত্বে নিয়ে আসতে হলে ‘Be’ কম্যান্ডমেন্ট ছাড়া অন্য কোনো পন্থা আছে কি?
বিগ ব্যাং সম্পর্কে উইকিপিডিয়া বলে, বিজ্ঞানী এডুইন হাবলের ধারণা মতে, দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের বেগ সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছেপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ফ্রিদমান-ল্যমেত্র্-রবার্টসন-ওয়াকার মেট্রিক অনুসারে এটি ব্যাখ্যা করা হয়েছেএই তত্ত্বসমূহের সাহায্যে অতীত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমগ্র মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন বিন্দু অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছেএই অবস্থায় সকল পদার্থ এবং শক্তি অতি উত্তপ্ত এবং ঘন অবস্থায় ছিলকিন্তু অবস্থার আগে কী ছিল তা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন ঐক্যমত্য নেইঅবশ্য সাধারণ আপেক্ষিকতা এর আগের সময়ের ব্যাখ্যার জন্য মহাকর্ষীয় অদ্বৈত বিন্দু (সিংগুলারিটি) নামক একটি শব্দের প্রস্তাব করেছেমহা বিস্ফোরণ শব্দটি স্থূল অর্থে প্রাচীনতম একটি বিন্দুর অতি শক্তিশালী বিস্ফোরণকে বোঝায় যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, আবার অন্যদিকে এই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বের উৎপত্তি গঠন নিয়ে বিশ্বতত্ত্বে যে মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে তাকেও বোঝায়
বিজ্ঞানী হাবলের এই প্রস্তাব থেকেই মহাবিষ্ফোরণ ধারনাটির ভিত্তি মজবুত হয়এখন দেখা যাক, এডুইন হাবল যে ধারনাটি ১৯২৫ সালে দিয়েছিলেন, সেই সম্পর্কে কুরআন প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে কি বলেছে? আল হাদীদের ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন-

وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
 মি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই এর প্রসারনকারী
উল্লেখ্য যে, ১৯২০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিজ্ঞানিদের ধারনা ছিলো যে মহাবিশ্বের আকৃতি নির্দিষ্টঅর্থাৎ অসম্প্রসারনশীলকিন্তু কোরআনের কথা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীত। এডুইন হাবল আল্লাহর কথাই নতুন করে আবিষ্কার করেছিলেন ১৯২৫ সালে
বিগ ব্যাং এর আর একটি গুরুত্তপূর্ন ধারনা হলো সিংগুলারিটি ষ্টিফেন হকিংস তা বইটিতে এই কথাটাই প্রতিষ্ঠিতি করার চেষ্টা করেছেন-যে একটি মাত্র ক্ষুদ্র বিন্দু এবং তাতে হঠা মহাবিষ্ফরনের ফলে মহাবিশ্ব তৈরি
আসুন দেখা যাক, উনিশ শতকে হকিংস যে কথা বলেছেন, যেই সম্পর্ক কুরআন কী বলে!

َوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ
কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম(আম্বিয়া ৩০)
ডা. জহুরুল হকের অনুবাদ অনুযায়ী,যারা অবিশ্বাস পোষ করে তারা কি দেখেনা যে মহাকাশ ণ্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে একাকার ছিল তারপর আমরা স্ববেগে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম
এখানে ল্লাহ বলেছেন যে, আকাশ পৃথিবী অর্থা পুরো মহাবিশ্ব একত্রিত অবস্থায় ছিলো, যা তিনি স্ববেগে আলাদা করে দিয়েছেনএখানে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে Big Bang বা মহাবিষ্ফোরণ সংঘটিত হওয়ার মুহূর্তের কথা ইজ্ঞিত করা হয়েছে
এছাড়াও কুরআনে বিগ ব্যাং সম্পর্কে অনেক ধাপ এবং অবস্থা কথা বলা হয়েছে আমরা বিস্ফোরণে পরবর্তী অবস্থার কথা জানি। বিজ্ঞানীরা বলেন, বিষ্ফোরণে পরে দীর্ঘকাল মহাবিশ্ব ধুমায়মান অবস্থায় ছিলো এবং পরে তা একত্রে ঘনীভূ হয়ে গ্রহ-গ্রহাণু তৈরি হয় এ সম্পর্কে কুরআন বলছে-

ثُمَّ اسْتَوَىٰ إِلَى السَّمَاءِ وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ ائْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ
 অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম (ফুসিসলা১১)

আমাদের এই মহাবিশ্বটি সৃষ্টির প্রারম্ভিক হতে আকৃতি, রঙ ও প্রকৃতিতে পৌছাঁতে সর্বমোট ৬টি অনির্দিষ্ট সময়কাল অতিবাহিত করেছেবিভিন্ন আয়াতে তা বর্নিত করেছেন যার মধ্যে সূরা হাদীদের ৪ নং আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْش
তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়টি সময়ে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন
আধুনিক বিজ্ঞান মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময়কালকে মোট ৬টি Period-এ বিশ্লেষন করেছে
১. Time Zero
২. Inflation
৩. Annihilation
৪. Proton and Neutron
৫. Atomic Nuclei
৬. Stable atom
এখন দেখি আল কুরআন কী বলছে এ সম্পর্কে!

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا ۖ
তিনি নভোমন্ডল ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়টি সময়কালে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেনতিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় যা আকাশে উত্থিত হয় (হাদীদ ৪)

পবিত্র কুরানের বিভিন্ন স্থানে ৬ টি সময়কালে পৃথিবী সৃষ্টির বর্ননা উল্লেখ করা হয়েছে


إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহতিনি নভোমন্ডল ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেনঅতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেনতিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসেতিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামীশুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করাআল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক (আল আরাফ ৫৪)

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۖ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ ۖ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ۚ ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
নিশ্চয়ই তোমাদের ালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেনতিনি কার্য পরিচালনা করেনকেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তাঅতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত করতোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না? (ইউনুস ৩)

অনেক অ্যান্টি ইসলামিক ওয়েব সাইটে মুক্তমনা নামধারী কাফির এবং মুরতাদেরা সাধারন মুসলিমদের কটাক্ষ করে কুরআনের বৈজ্ঞানিক অসামঞ্জস্যতানির্দেশ করে যুক্তি দেখায় যে, 24 6 = 144 ঘন্টায় মহাবিশ্বের সৃষ্টি অবাস্তব! কিন্তু প্রকৃতার্থে শাব্দিক বিশ্লেষনে যদি আমরা যাই তাহলে দেখবো উপরোক্ত আয়াতগুলোতে ইয়মব্যবহার না করে আইয়ামশব্দটি উল্লেখ করা হয়েছেArabic Dictionary তে আইয়ামশব্দের অর্থ লম্বা সময়এটি ১ দিন, ১০০ বছর অথবা অনির্দ্দিষ্ট সময়কাল হতে পারেআর ইয়মমানে একদিন এই আয়াতে আইয়াম শব্দটি ব্যবহার হয়েছেযদি ইয়মব্যবহৃত হতো তাহলে তাদের যুক্তিকে গ্রাহ্য করা যেত

বিশ্ব সৃষ্টি এবং বিকাশের ক্ষেত্রে কোরআনের আয়াতগুলো বিশ্লেষণ করলে কুরআনকে বিজ্ঞানময় না বলার কোন অবকাশ থাকে না।

فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِي كُلِّ سَمَاءٍ أَمْرَهَا ۚ وَزَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দুদিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেনআমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত সংরক্ষিত করেছিএটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা (ফুসসিলাত ১২)

إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ অর্থ-নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি (আস সফফাত ৬)
পৃথিবীর সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এবং রহস্যময় বিষয় জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে কুরআনে সবচেয়ে বেশি  ইঙ্গিত দেয়া হয়েছে।
تَبَارَكَ الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا مُنِيرً
কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে রাশিচক্র সৃষ্টি করেছেন এবং তাতে রেখেছেন সূর্য ীপ্তিময় চন্দ্র (আল ফুরকান ৬১)

أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللَّهُ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন? এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে! (নূহ ১৫-১৬)

اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
তিনিই আকাশসমূহ দৃশ্যমান খুঁটি ছাড়াই উচ্চে রেখেছেন এবং তিনি অধীন করেছেন সূর্য্য এবং চন্দ্রকে (আর রাদ ২)

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاءَ أَنْ تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয় (সূরা হজ্জ ৬৫)

মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে যারা সন্দেহ পোষণ করে তাদের ব্যাপারে সূরা নাযিয়াতের ২৭-২৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে-
أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاءُ ۚ بَنَاهَا رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا
কি সৃষ্টি করা অধিক কঠিন, মানুষ না আকাশ যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন? নীলাকাশের চাঁদোয়া তিনি উচ্চে তুলেছেন এবং তাকে সামঞ্জস্য করে সাজিয়েছেনরাত্রিকে অন্ধকার করা হয়েছে; তারপর এই অন্ধকার রাতের পর ধীরে ধীরে প্রভাতের আলো ফুটতে থাকে, প্রকাশ করা হয় দিবস

অনেকে মন্তব্য করে থাকে, কুরআনে বিজ্ঞানের সকল তত্ত্ব বিদ্যমান। আসলে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত ত্ত্বের বর্ননা নয়, কুরআন মানবজাতির নিকট প্রতিটি প্রয়োজনীয় তত্বের sign বা সাংকেতিক অথবা টেলিগ্রাফিক বার্তা সমন্বয়ে অবতীর্ণ হয়েছে যার বেশিরভাগই এখনো অনাবিষ্কৃতই রয়ে গেছে। মানুষের জ্ঞানের পরিধি যত বাড়ছে ততই আল-কুরআনের বিজ্ঞানের সত্যের উদ্ভাসিত সৌন্দর্যে সারা বিশ্ব হয়ে পড়ছে মুগ্ধইসলামের দিকে মানুষ আকৃষ্ট হবার একমাত্র কারন, বর্তমানে প্রমানিত তথ্য ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সাথে কুরআনের নির্ভূল বর্ননাশৈলী অতুলনীয় মিল
এই নির্দশন মানুষকে সত্য পথের আলোয় উদ্ভাসিত হতে আহবান করে যাতে সে সৃষ্টিকর্তা প্রণীত নিয়ম কানুন অনুযায়ী পৃথিবীর প্রকৃতির সাথে নিজের জীবনকে সাজাতে পারেএতো নির্দশন দেখার পর যারা সঠিক পথে ফিরে আসেনা, পবিত্র কুরআনে তাদের সম্পর্কে বলেছে-

صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
তারা বোবা, কালা ও অন্ধসুতরাং তারা ফিরে আসবে না (বাকারা ১৮)


ফাইয়াজ আল-মুহাইমিন