বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০১৫

ফিঙ্গার প্রিন্ট সিস্টেম


أَيَحْسَبُ الْإِنْسَانُ أَلَّنْ نَجْمَعَ عِظَامَهُبَلَىٰ قَادِرِينَ عَلَىٰ أَنْ نُسَوِّيَ بَنَانَهُ
মানুষ কি মনে করে যে আমি তার অস্থিসমূহ একত্রিত করব না? হ্যাঁ, আমি তার অঙ্গুলিগুলো পর্যন্ত সঠিকভাবে পুনর্বিন্যস্ত করতে সক্ষম (ক্বিয়ামাহ ৩-৪)
মৃত মানুষের হাড়গুলো মাটির মধ্যে বিভিন্ন অংশে খণ্ডিত ও বিভক্ত হওয়ার পরেও এগুলোর পুনরুত্থান এবং বিচারের দিন সকল মানুষকে আলাদাভাবে কিভাবে চিহ্নিত করা হবে সে ব্যাপারে কাফেররা প্রশ্ন করে আল্লাহ উত্তর দেন যে, তিনি কেবলমাত্র আমাদের হাড়গুলোকে একত্রিত করা নয় বরং আমাদের আঙ্গুলের ছাপও নিঁখুতভাবে পুনরায় তৈরি করতে সক্ষম এই আয়াতটির মাধ্যমে ফিঙ্গারপ্রিন্ট বিষয়ক টেলিগ্রাফিক ম্যাসেজটি কুরআন মানুষকে জানিয়েছে ১৪০০ বছর আগে
অথচ, ইংল্যাণ্ডেরর অধিবাসী Sir Francis Gold আবিষ্কার করেন পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের আঙ্গুলের ছাপ ভিন্ন ভিন্নসেটা গত ঊনবিংশ শতাব্দিতে! মানুষ এর আগে এগুলোকে কোন সাধারণ গুরত্বহীন বক্ররেখা হিসেবেই ভাবতোশরীরের অন্যান্য প্রত্যঙ্গের মতো অতি স্বাভাবিক এক অস্তিত্ব রুপে গ্রহন করেছিল মানব সমাজ, এর গভীরতম তাৎপযের্র প্রতি তেমন কেউ ভ্রুক্ষেপ করেনিযুগান্তকারী এ আবিষ্কারের পর অর্থাৎ ১৮৮০ সাল হতেই আঙ্গুলের ছাপ একটি বৈজ্ঞানিক সনাক্তকরন সংকেতরূপে বিভিন্ন কাজে ব্যবহৃত হতে শুরু করে
প্রতিটি মানুষের আঙ্গুল বহন করে ভিন্ন ডিজাইনএমন কোনো ব্যক্তি পৃথিবীতে পাওয়া যাবে না যার আঙ্গুলে ছাপ অন্য কোনো ব্যক্তির সাথে সম্পূর্ন মিলে যাবেএমনকি হুবহু একই রূপ যমজ সন্তানের পর্যন্ত প্রত্যেকেরই রয়েছে অনন্য সাধারণ ভিন্ন অঙ্গুলের রেখাসমূহঅন্যভাবে বলা যায়, মানুষের স্বরুপ তাদের অঙ্গুলি সমূহে সংকলনভুক্ত অর্থাৎ সংকেতিক কোডের সাহায্যে লেখা রয়েছেআধুনিক কম্পিউটার জগতে ব্যবহৃত রেখা সঙ্কেত অথবা  Bar code সিস্টেমের সঙ্গে তুলনা করা চলে মানুষের আঙ্গুলের সুচারু গঠনটিকেফিঙ্গার-প্রিন্টের রেখা সমূহের উপর গুরত্ব প্রদান করার ব্যাপারে বিশেষ অর্থ হচ্ছে-প্রত্যেকের অঙ্গুলীর রেখাসমূহ অমিশ্র ও অদ্বিতীয়প্রতিটি মানুষ, মৃত কিংবা জীবিত , এরূপ প্রত্যেকেরই ভিন্ন ডিজাইনের অনন্য আঙ্গুলের আঁকিবুকি রয়েছেআর তাই অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ প্রমাণ হিসেবে উক্ত রেখাসমূহকে মানুষের পরিচয়ের জন্য সন্দেহাতীতভাবে গ্রহন করে নেয়া হয়েছে আর বহুমাত্রিক উদ্দেশ্যেই তা পৃথিবীর সর্বত্র ব্যবহার করা হয়
এই আঙ্গুলের ছাপের মাধ্যমে পৃথিবীর বড় বড় গোয়েন্দা সংস্থা যেমন- FBI, RAW, MOSSAD, PCI, KGB- অপরাধী সনাক্ত করতে অথবা সঠিক মানুষের ধরন শনাক্ত করতে সমর্থ হয়েছেসম্প্রতিকালে, বাংলাদেশ সরকার আঙ্গুলছাপ ব্যবহার করছে ভোটের র্কাড, জাতীয়তা কার্ড, পাসপোর্ট ও বিদেশে লোক পাঠানোর জন্য, অফিসিয়াল ডাটাবেস বানানোর জন্য এবং ডিবি অপরাধী চিহ্নিতকরনের লক্ষ্যে ফিঙ্গার প্রিন্ট টেকনোলজী ব্যবহার করতে শিখছে

ভাবুন তো, একবার ১৪০০ বছর আগে এসব তথ্য কার জানা ছিল? উম্মি মুহাম্মাদের পক্ষে কি কখনোই সম্ভব ছিল এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্য নিজে থেকে মানুষকে জানাবার, যদি না কুরআনের মাধ্যমে আল্লাহ তাকে জানিয়ে দিতেন?
দুই ব্যক্তির আঙ্গুলের ছাপের পার্থক্য এতই আপেক্ষিক ও সূক্ষ্ম যে, কেবল অভিজ্ঞ ব্যক্তিই উপযুক্ত যন্ত্রপাতির মাধ্যমে তা শনাক্ত করতে পারেএটি কুরআন মাজিদের অপর এক মুজিজা যে তা এই বাস্তবতার বর্ণনা দিয়েছে মানুষ তা ধারণা করারও বহু আগেআমাদের জীবন অতি সংক্ষিপ্ত আরো অনেক কিছু আবিষ্কার হবে ভবিষ্যতে কিন্তু ততোদিন আমরা মাটির সাথে মিশে যাবো, কিন্তু যখন বিচার দিবস উপস্থিত হবে আমাদের অবিকল শরীর দিয়ে মাটি হতে উঠানো হবে এবং আল্লাহ বলছেন এত অবিকল দেহ ফিরে পাবে যে নিজের আঙ্গুলের ছাপও সে সনাক্ত করতে পারবে সৃষ্টিকর্তা আমাদের Super Brain দিয়েছেন বন্য প্রানির মতো বেচেঁ থাকার জন্য নয়কুরআন নিয়ে ভাবতে হবেকুরআনের টেলিপ্যাথিক মেসেজগুলো নিয়ে গবেষণা করতে হবেতাহলে, এরকম অজস্র বৈজ্ঞানিক উদাহরণ বেরিয়ে আসবে কুরআনের প্রতিটি পাতা থেকে

Faiyaz Al-Muhaimin

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন