বৃহস্পতিবার, ১১ জুন, ২০১৫

কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন ও বিগ ব্যাং থিওরি

একটি নির্দিষ্ট স্থানে অনবরত বিভিন্ন ধরনের কণিকা (অর্থাৎ ভর তথা শক্তি) তৈরি হয় এবং অল্প সময় পর আবার তা মিলিয়ে যায় এটাই কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন
কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন অনুযায়ী কোনো কিছু সৃষ্টি হতে পারে শূণ্য থেকেইএখানে শূণ্য নিয়ে আবার একটা ঝামেলা আছেম্যাটার এবং এন্টি ম্যাটারের ব্যাপারটাকে উপেক্ষা করা যায় না! যাই হোক, মূল কথা হচ্ছে-কোন কিছু সৃষ্টি হতে পারে শূণ্য থেকেইশূণ্য বলতে এখানে ভ্যাকিউমকে বোঝানো হচ্ছে না, বোঝানো হচ্ছে জিরো বা সিরিয়াস শূন্যকে
আইনস্টাইন মহাবিশ্বকে একটি স্থিতিশীল রূপ দেয়ার জন্য প্রথমে একটা ধ্রুবক যোগ করেছিলেন তারপর সেটাকে জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল বলে বাদও দিয়েছিলেনকিন্তু ছয় দশক পরে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা কোয়ান্টাম বলবিদ্যা এবং গুপ্ত শক্তি নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে দেখলেন, আইনস্টাইন আসলে ভুল ছিলেন নাআইনস্টাইনের মতো তাদেরও সমীকরণে একটা ধ্রুবক যোগ করতেই হচ্ছে, আর সেই ধ্রুবকটা বসছে সমীকরণের ডান দিকেতার মানে এক্ষেত্রে সমীকরণ সঠিক হলে-শূন্যতার মধ্যেই কিন্তু এক ধরণের শক্তি লুকিয়ে আছে; আর সেটাই তৈরি করে ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের মাধ্যমে পদার্থ তৈরির প্রাথমিক ক্ষেত্রবিষয়টা দুর্বোধ্য মনে হচ্ছে, না? আচ্ছা, একটু সহজ করা যাক!
রহস্যময় এই শূন্য শক্তি কিংবা ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের বৈজ্ঞানিক ভিত্তিটি গড়ে উঠেছে হাইজেনবার্গের বিখ্যাত অনিশ্চয়তা তত্ত্বের কাঁধে ভর করে১৯২৭ সালে জার্মান পদার্থবিদ ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ গাণিতিকভাবে প্রমাণ করে দেখান যে, কোন বস্তুর অবস্থান এবং ভরবেগ একসাথে নিশ্চিতভাবে নির্ণয় করা সম্ভব নয়বস্তুর অবস্থান ঠিকঠাক মত মাপতে গেলে দেখা যাবে ভরবেগের তথ্য যাচ্ছে হারিয়ে, আবার ভরবেগ সূক্ষ্মভাবে পরিমাপ করতে গেলে বস্তুর অবস্থান অজানাই থেকে যাবেকাজেই হাইজেনবার্গের এই সূত্র সত্যি হয়ে থাকলে, এমনকি পরম শূন্যেও একটি কণার ফ্লাকচুয়েশন বজায় থাকার কথা, কারণ কণাটি নিশ্চল হয়ে যাওয়ার অর্থই হবে এর অবস্থান এবং ভরবেগ সম্বন্ধে আমাদেরকে নিশ্চিত তথ্য জানিয়ে দেওয়া, যা প্রকারান্তরে হাইজেনবার্গের অনিশ্চয়তা তত্ত্বের লঙ্ঘন
বিজ্ঞানীরা ব্যবহারিক ভাবেই এর প্রমাণ পেয়েছেনএকটি প্রমাণ হচ্ছে Lamb shift যা আহিত পরমাণুর মধ্যস্থিত দুটো স্তরে শক্তির তারতম্য প্রকাশ করেআরেকটি প্রমাণ হল টপ কোয়ার্কের ভরের পরিমাপতবে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের সবচেয়ে জোরদার প্রমাণ পাওয়া গেছে বিখ্যাত কাসিমিরের প্রভাব থেকে
১৯৪৮ সালে ডাচ পদার্থবিদ হেনরিক কাসিমির বলেছিলেন, কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশন সত্যি হয়ে থাকলে দুটো ধাতব পাত খুব কাছাকাছি আনা হলে দেখা যাবে তারা একে অন্যকে ধীরে ধীরে আকর্ষণ করেছেএর কারণ হচ্ছে, ধাতব পাতগুলোর মধ্যকার সংকীর্ণ স্থানটিতে ভ্যাকুয়াম ফ্লাকচুয়েশনের ফলে খুব উচ্চ কম্পাঙ্কের বিদ্যুৎ চুম্বকীয় মোডের উদ্ভব ঘটে যা ধাতব পাতগুলোকে একে অপরের দিকে আকর্ষণে বাধ্য করেএ ব্যাপারটিই পরবর্তীতে মার্কস স্প্যার্ণে, স্টিভ লেমোরাক্স প্রমুখ বিজ্ঞানীদের পরীক্ষায় প্রমাণিত হয়
বিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে আমাদের সকলের সুপরিচিত দুইটি থিওরি হল-শক্তির নিত্যতার সূত্র  এবং ভরের নিত্যতা সূত্র মহাবিশ্বে মোট শক্তির পরিমাণ সমান, মোট ভরও তাইকিন্তু পরে জানা গেল, ব্যাপারটা পুরোপুরি সত্যি না আসলে ভর ও শক্তি নিজেদের মাঝে পরিবর্তিত হতে পারেআইনস্টাইনের E = mc2 সূত্র প্রমাণ করে ভর ও শক্তি একই জিনিসএকটা নির্দিষ্ট স্থানে ভর ও শক্তির পরিমাণ একসাথে নির্দিষ্ট, আলাদা আলাদাভাবে নয়একে আমরা বলি, ভর ও শক্তির নিত্যতা একটা নির্দিষ্ট স্থানে ভর ও শক্তির মিলিত পরিমাণ কখনো পরিবর্তিত হবে না-এটাই এর মূল কথাকিন্তু চিরচেনা ধারণায় চির ধরাল কণিকা জগ আবির্ভাব হল কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের

এখন প্রশ্ন হলো-ভর-শক্তির কি তাহলে নিত্যতা নেই? না, নেইভর-শক্তির নিত্যতার এই সূত্রও ভেঙ্গে পড়ে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের কারনেকিন্তু সেটা খুব অল্প সময়ের জন্য
একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো-কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনে শক্তি বা ভরের এই তারতম্য অত্যন্ত কম সময়ের জন্য হলেও এর প্রভাব কিন্তু সুদূরপ্রসারী হতে পারেযেমন ফ্লাকচুয়েশন এর কারণে ইলেকট্রনের চার্জ কম-বেশি হয়

পদার্থবিজ্ঞানী লিওনার্ড ম্লোডিনোর সাথে লেখা সাম্প্রতিক Grand Design বইয়ে স্টিফেন হকিং উল্লেখ করেছেন, মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সূত্রের মতো পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন সূত্র কার্যকর রয়েছে, তাই একদম শূন্যতা থেকেও মহাবিশ্বের উৎপত্তি সম্ভব এবং সেটি অবশ্যম্ভাবী স্বতঃস্ফূর্তভাবে উৎপত্তি হওয়ার কারণেই-There is something rather than nothing সে কারণেই মহাবিশ্বের অস্তিত্ব রয়েছে, অস্তিত্ব রয়েছে আমাদেরমহাবিশ্ব উৎপত্তির সময় বাতি জ্বালানোর জন্য ঈশ্বরের কোন প্রয়োজন নেই

হকিং এর সাম্প্রতিক বইটি পাবলিশ হওয়ার পর তিনি ব্লগে ‘Can a Universe Create Itself Out of Nothing?’ শিরোনামেও ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেছেন আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের আলোকেসেখানে তিনি উল্লেখ করেছেন, "আপনি হয়তো ভাবতে পারেন, শূন্য থেকে মহাবিশ্বের উদ্ভবের ধারনাটা পদার্থ এবং শক্তির নিত্যতার সূত্রের লঙ্ঘনকীভাবে আপনি শূন্য থেকে রাতারাতি একটা মহাবিশ্ব তৈরি করে ফেলতে পারেন? ওয়েল, যদি আপনি মহাবিশ্বের সমস্ত ভর হিসেব করেন, দেখবেন এটা ধনাত্মকআর যদি আপনি মহাবিশ্বের মহাকর্ষ ক্ষেত্রের শক্তির হিসেব নেন, দেখবেন সেটা ঋণাত্মকযখন আপনি এ দুটোকে যোগ করবেন, কি পাবেন? শূন্যতার মানে মহাবিশ্ব তৈরি করতে কোন শক্তি আসলে লাগছে নামহাবিশ্ব ফ্রি পাচ্ছেন আপনি যেন ফ্রি লাঞ্চ হিসেবেআপনি হয়তো মাথা নেড়ে ভাবতে পারেন নাহ, এটা ঠিক নয়এই যে চারিদিকের ধনাত্মক চার্জ আর ঋণাত্মক চার্জ দেখি কই তারা তো একে অপরকে নিষ্ক্রিয় করে দিচ্ছে নাতাহলে কীভাবে শূন্য থেকে মহাবিশ্ব পাওয়া যাবে? ওয়েল,আপনি যদি একই ভাবে মহাবিশ্বের যাবতীয় ধনাত্মক চার্জের পরিমাণ আর ঋণাত্মক চার্জের পরিমাণ ধরে যোগ করেন দেখবেন যোগফল পাওয়া যাচ্ছে শূন্য! মহাবিশ্বের আসলে কোন নীট চার্জ নেই

আচ্ছা স্পিন বা ঘূর্ণনের ব্যাপারেই বা ঘটনা কি? গ্যালাক্সির ঘূর্ণন আছে, তাই না? এবং তারা ঘুরে বিভিন্ন ডাইরেকশনেআপনি যদি গ্যালাক্সিগুলোর সমস্ত ঘূর্ণন যোগ করেন, কি পাবেন? শূন্যসুতরাং মহাবিশ্বের রয়েছে শূন্য স্পিন, ‘শূন্য চার্জ, এবং শূন্য এনার্জি কনটেন্টঅন্য কথায় পুরো মহাবিশ্বই শূন্য থেকে পাওয়া

অর্থাৎ এখানে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় হলো-শূন্য হতে মহাবিশ্বের সৃষ্টিআপনা আপনি সৃষ্টি প্রকিয়াতাহলে প্রশ্ন হলো, বিজ্ঞানী এবং অবিশ্বাসীরা-এর উপর ভিত্তি করে কীভাবে বলেন যে কোনো ঈশ্বর নেই? এখানে ঈশ্বর তথা সৃষ্টিকর্তা কীভাবে বাদ যায়?
স্টিফেন হকিং কিন্তু ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করেননিতিনি বলেছেন, "ঈশ্বরের অস্তিত্ব নেই তা আমরা প্রমাণ করতে পারবো না, তবে মহাবিশ্ব সৃষ্টিতে ঈশ্বরের প্রয়োজন নেই।"
It argues that invoking God is not necessary to explain the origins of the universe, and that the Big Bang is a consequence of the laws of physics alone. In response to criticism, Hawking has said; "One can't prove that God doesn't exist, but science makes God unnecessary." [The Grand Design]

এখন দেখা যাক কুরআনে বিষয়টিকে কীভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে!
কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশনের মূল বিষয় হলো শূন্য হতে মহাবিশ্ব সৃষ্টিকুরআনও তাই বলছে-


بَدِيعُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضِ ۖ وَإِذَا قَضَىٰ أَمْرًا فَإِنَّمَا يَقُولُ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
তিনি আকাশমন্ডলী ও জমিনকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে আনয়নকারী; তিনি যখন কিছু করতে চান তখন সেটিকে বলেন, হয়ে যাও অমনি তা হয়ে যায় (বাকারা ১১৭)

এখানে বলা হচ্ছে, অনস্তিত্ব হতে অস্তিত্বে আনায়ন করেনঅর্থাৎ, পূর্বে সবকিছু ছিল অস্তিত্বহীনজিরো বা সিরিয়াস জিরো শূন্য হতে মহাবিশ্ব সৃষ্টির প্রক্রিয়াকে কুরআন সমর্থন করছেআর সৃষ্টিকর্তার হস্তক্ষেপের যে বিষয়টি সেটা হল-মহান আল্লহ সৃষ্টির প্রক্রিয়া পরিকল্পনা করেছেন (সূরা হাশর ২৪) এবং নির্দেশ দিলেন হওয়ার আর তা আপনা আপনি পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়ে যায়
هُوَ اللَّهُ الْخَالِقُ الْبَارِئُ الْمُصَوِّرُ
তিনিই আল্লাহ তাআলা, স্রষ্টা, উদ্ভাবক, রূপদাতা, উত্তম নাম সমূহ তাঁরই। (হাশর ২৪)


إِنَّمَا أَمْرُهُ إِذَا أَرَادَ شَيْئًا أَنْ يَقُولَ لَهُ كُنْ فَيَكُونُ
বস্তুত তাঁর সৃষ্টিকার্য এরূপ যে, যখন তিনি কিছু সৃষ্টি করতে ইচ্ছে করেন, তখন তিনি তাকে বলেন, ‘হও’, অমনি তা হয়ে যায়। (ইয়া-সীন ৮২)
মহান আল্লহ কেবল চারটি সৃষ্টির কথা কুরআনে বলেছেনবাদ বাকি সৃষ্টির ক্ষেত্রে কেবল নির্দেশ করেছেন, আর তা পরিকল্পনা অনুযায়ী হয়ে গেছে
[ইবনু ওমর (রা) বলেন, আল্লাহ তাআলা চারটি বস্তু তাঁর নিজ হাতে সৃষ্টি করেছেন, (১) আরশ (২) কলম (৩) আদম (৪)জান্নাতু আদনঅতঃপর যাবতীয় সৃষ্টিকে লক্ষ্য করে বলেন, হয়ে যাও, ফলে তা হয়ে গেছে (হাকেম ৩২৪৪, সনদ-সহীহ)]

শূন্য থেকে মহাবিশ্ব সৃষ্টি প্রক্রিয়া আর ঈশ্বরের নির্দেশে শূন্য হতে মহাবিশ্ব সৃষ্টির মধ্যে কোনো বৈজ্ঞানিক বৈপরীত্য নেইবরং, দ্বিতীয় প্রক্রিয়াটি স্বাভাবিকভাবে বেশি যৌক্তিক!
মূল কথা হলো, কুরআন অনুযায়ীও এই মহাবিশ্বের একটি শুরু আছে অর্থাৎ এই মহাবিশ্বকে অনস্তিত্ব থেকে অস্তিত্বে নিয়ে আসা হয়েছে, তা পরম শূন্যথেকে হোক বা অন্য যেকোনো ভাবেই হোক না কেনউপরোল্লেখিত আয়াতে উল্লেখিত ‘Be’ কম্যান্ডমেন্টকে কোয়ান্টাম ফ্লাকচুয়েশান এবং ‘Big Bang’ এর সাথে অত্যন্ত যৌক্তিক ভাবেই তুলনা করা যেতে পারেঅর্থাৎ মহাবিশ্বের শুরু এবং সম্প্রসারিত হওয়ার মুহূর্তবিজ্ঞানীরা যেমন বছরের পর বছর ধরে প্রস্তুতি নিয়ে সুইচ টিপেকৃত্রিম বিগ ব্যাং শুরু করতে যাচ্ছেন এই মহাবিশ্বের স্রষ্টা ‘Be’ কম্যান্ডমেন্ট এর মাধ্যমে আজ থেকে প্রায় পনের বিলিয়ন বছর আগে বাস্তব বিগ ব্যাং শুরু করেছিলেনকেউ কেউ আবার এই ‘Be’ কম্যান্ডমেন্টকে নিয়ে বেশ কৌতুক করার চেষ্টা করেকারো মধ্যে সামান্যতম কমন সেন্স থাকলে এই বিষয়টা নিয়ে কৌতুক করার আগে দুবার করে ভেবে দেখা উচিতঅনস্তিত্ব থেকে কোনো কিছুকে অস্তিত্বে নিয়ে আসতে হলে এবং ক্ষুদ্রতম থেকে বিশালাকার কিছু তৈরি করতে গেলে ‘Be’ কম্যান্ডমেন্ট ছাড়া অন্য কোনো পন্থা কখেনাই থাকতে পারে না
বিগ ব্যাং সম্পর্কে উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, বিজ্ঞানী এডুইন হাবলের ধারণা মতে, দূরবর্তী ছায়াপথসমূহের বেগ সামগ্রিকভাবে পর্যালোচনা করলে দেখা যায় এরা পরষ্পর দূরে সরে যাচ্ছে অর্থাৎ মহাবিশ্ব ক্রমশ সম্প্রসারিত হচ্ছেআপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের ফ্রিদমান-ল্যমেত্র্-রবার্টসন-ওয়াকার মেট্রিক অনুসারে এটি ব্যাখ্যা করা হয়েছেএই তত্ত্বসমূহের সাহায্যে অতীত বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সমগ্র মহাবিশ্ব একটি সুপ্রাচীন বিন্দু অবস্থা থেকে উৎপত্তি লাভ করেছেএই অবস্থায় সকল পদার্থ এবং শক্তি অতি উত্তপ্ত এবং ঘন অবস্থায় ছিলকিন্তু এ অবস্থার আগে কী ছিল তা নিয়ে পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে কোন ঐক্যমত্য নেইঅবশ্য সাধারণ আপেক্ষিকতা এর আগের সময়ের ব্যাখ্যার জন্য মহাকর্ষীয় অদ্বৈত বিন্দু (সিংগুলারিটি) নামক একটি শব্দের প্রস্তাব করেছেমহা বিস্ফোরণ শব্দটি স্থূল অর্থে প্রাচীনতম একটি বিন্দুর অতি শক্তিশালী বিস্ফোরণকে বোঝায় যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি হয়েছিল, আবার অন্যদিকে এই বিস্ফোরণকে কেন্দ্র করে মহাবিশ্বের উৎপত্তি ও গঠন নিয়ে বিশ্বতত্ত্বে যে মতবাদের সৃষ্টি হয়েছে তাকেও বোঝায়

বিজ্ঞানী হাবলের এই প্রস্তাব থেকেই মহাবিষ্ফোরণ ধারনাটির ভিত্তি মজবুত হয়এখন দেখা যাক, এডুইন হাবল যে ধারনাটি ১৯২৫ সালে দিয়েছিলেন, সেই সম্পর্কে কুরআন প্রায় ১৫০০ বছর পূর্বে কি বলেছে? আল হাদীদের ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন-

وَالسَّمَاءَ بَنَيْنَاهَا بِأَيْدٍ وَإِنَّا لَمُوسِعُونَ
 আমি স্বীয় ক্ষমতাবলে আকাশ নির্মাণ করেছি এবং আমি অবশ্যই এর প্রসারনকারী

উল্লেখ্য যে, ১৯২০ সালের পূর্ব পর্যন্ত বিজ্ঞানিদের ধারনা ছিলো যে মহাবিশ্বের আকৃতি নির্দিষ্টঅর্থাৎ অসম্প্রসারনশীলকিন্তু কুরআনের কথা ছিল তার সম্পূর্ণ বিপরীতএডুইন হাবল আল্লাহর কথাই নতুন করে আবিষ্কার করেছিলেন ১৯২৫ সালে
বিগ ব্যাং এর আর একটি গুরুত্তপূর্ন ধারনা হলো সিংগুলারিটি ষ্টিফেন হকিংস তাঁর বইটিতে এই কথাটাই প্রতিষ্ঠিতি করার চেষ্টা করেছেন-যে একটি মাত্র ক্ষুদ্র বিন্দু এবং তাতে হঠা মহাবিষ্ফরনের ফলে মহাবিশ্ব তৈরি

আসুন দেখা যাক, উনিশ শতকে হকিংস যে কথা বলেছেন, যেই সম্পর্ক কুরআন কী বলে!

َوَلَمْ يَرَ الَّذِينَ كَفَرُوا أَنَّ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ كَانَتَا رَتْقًا فَفَتَقْنَاهُمَا ۖ وَجَعَلْنَا مِنَ الْمَاءِ كُلَّ شَيْءٍ
কাফেররা কি ভেবে দেখে না যে, আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল, অতঃপর আমি উভয়কে খুলে দিলাম এবং প্রাণবন্ত সবকিছু আমি পানি থেকে সৃষ্টি করলাম(আম্বিয়া ৩০)

ডা. জহুরুল হকের অনুবাদ অনুযায়ী,যারা অবিশ্বাস পোষ করে তারা কি দেখেনা যে মহাকাশ ণ্ডলী ও পৃথিবী উভয়ে একাকার ছিল তারপর আমরা স্ববেগে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করে দিলাম
এখানে আল্লাহ বলেছেন যে, আকাশ ও পৃথিবী অর্থা পুরো মহাবিশ্ব একত্রিত অবস্থায় ছিলো, যা তিনি স্ববেগে আলাদা করে দিয়েছেনএখানে অত্যন্ত স্পষ্ট ভাবে Big Bang বা মহাবিষ্ফোরণ সংঘটিত হওয়ার মুহূর্তের কথা ইজ্ঞিত করা হয়েছে
এছাড়াও কুরআনে বিগ ব্যাং সম্পর্কে অনেক ধাপ এবং অবস্থার কথা বলা হয়েছে আমরা বিস্ফোরণের পরবর্তী অবস্থার কথা জানি বিজ্ঞানীরা বলেন, বিষ্ফোরণের পরে দীর্ঘকাল মহাবিশ্ব ধুমায়মান অবস্থায় ছিলো এবং পরে তা একত্রে ঘনীভূত হয়ে গ্রহ-গ্রহাণু তৈরি হয় এ সম্পর্কে কুরআন বলছে-

ثُمَّ اسْتَوَىٰ إِلَى السَّمَاءِ وَهِيَ دُخَانٌ فَقَالَ لَهَا وَلِلْأَرْضِ ائْتِيَا طَوْعًا أَوْ كَرْهًا قَالَتَا أَتَيْنَا طَائِعِينَ
 অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোযোগ দিলেন যা ছিল ধুম্রকুঞ্জ, অতঃপর তিনি তাকে ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে আস ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়তারা বলল, আমরা স্বেচ্ছায় আসলাম” (ফুসিসলাত ১১)

আমাদের এই মহাবিশ্বটি সৃষ্টির প্রারম্ভিক হতে আকৃতি, রঙ ও প্রকৃতিতে পৌছাঁতে সর্বমোট ৬টি অনির্দিষ্ট সময়কাল অতিবাহিত করেছেবিভিন্ন আয়াতে তা বর্নিত করেছেন যার মধ্যে সূরা হাদীদের ৪ নং আয়াত বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْش
তিনি নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়টি সময়ে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেন
আধুনিক বিজ্ঞান মহাবিশ্ব সৃষ্টির সময়কালকে মোট ৬টি Period-এ বিশ্লেষন করেছে
১. Time Zero
২. Inflation
৩. Annihilation
৪. Proton and Neutron
৫. Atomic Nucleus
৬. Stable atom

এখন দেখি আল কুরআন কী বলছে এ সম্পর্কে!

هُوَ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۚ يَعْلَمُ مَا يَلِجُ فِي الْأَرْضِ وَمَا يَخْرُجُ مِنْهَا وَمَا يَنْزِلُ مِنَ السَّمَاءِ وَمَا يَعْرُجُ فِيهَا ۖ
তিনি নভোমন্ডল ও ভূ-মন্ডল সৃষ্টি করেছেন ছয়টি সময়কালে, অতঃপর আরশের উপর সমাসীন হয়েছেনতিনি জানেন যা ভূমিতে প্রবেশ করে ও যা ভূমি থেকে নির্গত হয় এবং যা আকাশ থেকে বর্ষিত হয় ও যা আকাশে উত্থিত হয়” (হাদীদ ৪)

পবিত্র কুরানের বিভিন্ন স্থানে ৬ টি সময়কালে পৃথিবী সৃষ্টির বর্ননা উল্লেখ করা হয়েছে


إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ يُغْشِي اللَّيْلَ النَّهَارَ يَطْلُبُهُ حَثِيثًا وَالشَّمْسَ وَالْقَمَرَ وَالنُّجُومَ مُسَخَّرَاتٍ بِأَمْرِهِ ۗ أَلَا لَهُ الْخَلْقُ وَالْأَمْرُ ۗ تَبَارَكَ اللَّهُ رَبُّ الْعَالَمِينَ
নিশ্চয় তোমাদের প্রতিপালক আল্লাহতিনি নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেনঅতঃপর আরশের উপর অধিষ্টিত হয়েছেনতিনি পরিয়ে দেন রাতের উপর দিনকে এমতাবস্থায় যে, দিন দৌড়ে রাতের পিছনে আসেতিনি সৃষ্টি করেছেন সূর্য, চন্দ্র ও নক্ষত্র দৌড় স্বীয় আদেশের অনুগামীশুনে রেখ, তাঁরই কাজ সৃষ্টি করা এবং আদেশ দান করাআল্লাহ, বরকতময় যিনি বিশ্বজগতের প্রতিপালক (আল আরাফ ৫৪)

إِنَّ رَبَّكُمُ اللَّهُ الَّذِي خَلَقَ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ فِي سِتَّةِ أَيَّامٍ ثُمَّ اسْتَوَىٰ عَلَى الْعَرْشِ ۖ يُدَبِّرُ الْأَمْرَ ۖ مَا مِنْ شَفِيعٍ إِلَّا مِنْ بَعْدِ إِذْنِهِ ۚ ذَٰلِكُمُ اللَّهُ رَبُّكُمْ فَاعْبُدُوهُ ۚ أَفَلَا تَذَكَّرُونَ
নিশ্চয়ই তোমাদের পালনকর্তা আল্লাহ যিনি তৈরী করেছেন আসমান ও যমীনকে ছয় দিনে, অতঃপর তিনি আরশের উপর অধিষ্ঠিত হয়েছেনতিনি কার্য পরিচালনা করেনকেউ সুপারিশ করতে পাবে না তবে তাঁর অনুমতি ছাড়া ইনিই আল্লাহ তোমাদের পালনকর্তাঅতএব, তোমরা তাঁরই এবাদত করতোমরা কি কিছুই চিন্তা কর না? (ইউনুস ৩)

বিশ্ব সৃষ্টি এবং বিকাশের ক্ষেত্রে কুরআনের আয়াতগুলো বিশ্লেষণ করলে কুরআনকে বিজ্ঞানময় না বলার কোন অবকাশ থাকে না

فَقَضَاهُنَّ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ فِي يَوْمَيْنِ وَأَوْحَىٰ فِي كُلِّ سَمَاءٍ أَمْرَهَا ۚ وَزَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِمَصَابِيحَ وَحِفْظًا ۚ ذَٰلِكَ تَقْدِيرُ الْعَزِيزِ الْعَلِيمِ
অতঃপর তিনি আকাশমন্ডলীকে দুদিনে সপ্ত আকাশ করে দিলেন এবং প্রত্যেক আকাশে তার আদেশ প্রেরণ করলেনআমি নিকটবর্তী আকাশকে প্রদীপমালা দ্বারা সুশোভিত ও সংরক্ষিত করেছিএটা পরাক্রমশালী সর্বজ্ঞ আল্লাহর ব্যবস্থাপনা (ফুসসিলাত ১২)

[বিভিন্ন সূরায় বর্ণিত তথ্যানুযায়ী, নভোমণ্ডল সৃষ্টিতে সময় লেগেছে ২দিনভূমণ্ডল সৃষ্টিতে সময় লেগেছে ২দিন এবং অন্যান্য কাজে (যেমন খাদ্যের ব্যবস্থা ইত্যাদি) সময় লেগেছে ২দিন]



إِنَّا زَيَّنَّا السَّمَاءَ الدُّنْيَا بِزِينَةٍ الْكَوَاكِبِ অর্থ-নিশ্চয় আমি নিকটবর্তী আকাশকে তারকারাজির দ্বারা সুশোভিত করেছি (আস সফফাত ৬)

পৃথিবীর সবচেয়ে রোমাঞ্চকর এবং রহস্যময় বিষয় জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কে কুরআনে সবচেয়ে বেশি  তথ্য প্রদান করা হয়েছে

أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ خَلَقَ اللَّهُ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًا وَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন? এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন প্রদীপরূপে! (নূহ ১৫-১৬)

اللَّهُ الَّذِي رَفَعَ السَّمَاوَاتِ بِغَيْرِ عَمَدٍ تَرَوْنَهَا
তিনিই আকাশসমূহ দৃশ্যমান খুঁটি ছাড়াই উচ্চে রেখেছেন এবং তিনি অধীন করেছেন সূর্য্য এবং চন্দ্রকে (আর রাদ ২)

أَلَمْ تَرَ أَنَّ اللَّهَ سَخَّرَ لَكُمْ مَا فِي الْأَرْضِ وَالْفُلْكَ تَجْرِي فِي الْبَحْرِ بِأَمْرِهِ وَيُمْسِكُ السَّمَاءَ أَنْ تَقَعَ عَلَى الْأَرْضِ إِلَّا بِإِذْنِهِ ۗ إِنَّ اللَّهَ بِالنَّاسِ لَرَءُوفٌ رَحِيمٌ
তুমি কি দেখ না যে, ভূপৃষ্টে যা আছে এবং সমুদ্রে চলমান নৌকা তৎসমুদয়কে আল্লাহ নিজ আদেশে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন এবং তিনি আকাশ স্থির রাখেন, যাতে তাঁর আদেশ ব্যতীত ভূপৃষ্টে পতিত না হয় (সূরা হজ্জ ৬৫)

মহাবিশ্ব সৃষ্টি সম্পর্কে যারা সন্দেহ পোষণ করে তাদের ব্যাপারে সূরা নাযিয়াতের ২৭-২৯ নং আয়াতে বলা হয়েছে-

أَأَنْتُمْ أَشَدُّ خَلْقًا أَمِ السَّمَاءُ ۚ بَنَاهَا رَفَعَ سَمْكَهَا فَسَوَّاهَا وَأَغْطَشَ لَيْلَهَا وَأَخْرَجَ ضُحَاهَا
কি সৃষ্টি করা অধিক কঠিন, মানুষ না আকাশ যা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন? নীলাকাশের চাঁদোয়া তিনি উচ্চে তুলেছেন এবং তাকে সামঞ্জস্য করে সাজিয়েছেনরাত্রিকে অন্ধকার করা হয়েছে; তারপর এই অন্ধকার রাতের পর ধীরে ধীরে প্রভাতের আলো ফুটতে থাকে, প্রকাশ করা হয় দিবস

অনেকে মন্তব্য করে থাকে, কুরআনে বিজ্ঞানের সকল তত্ত্ব বিদ্যমানআসলে বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তিগত ত্ত্বের বর্ননা নয়, কুরআন মানবজাতির নিকট প্রতিটি প্রয়োজনীয় তত্ত্বের sign বা সাংকেতিক অথবা টেলিগ্রাফিক বার্তা সমন্বয়ে অবতীর্ণ হয়েছে যার বেশিরভাগই এখনো অনাবিষ্কৃতই রয়ে গেছে মানুষের জ্ঞানের পরিধি যত বাড়ছে ততই আল-কুরআনের বিজ্ঞানের সত্যের উদ্ভাসিত সৌন্দর্যে সারা বিশ্ব হয়ে পড়ছে মুগ্ধইসলামের দিকে মানুষ আকৃষ্ট হবার একমাত্র কারন, বর্তমানে প্রমানিত তথ্য ও প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতার সাথে কুরআনের নির্ভূল বর্ননাশৈলী অতুলনীয় মিল

এই নির্দশন মানুষকে সত্য পথের আলোয় উদ্ভাসিত হতে আহ্বান করে যাতে, সে সৃষ্টিকর্তা প্রণীত নিয়ম কানুন অনুযায়ী পৃথিবীর প্রকৃতির সাথে নিজের জীবনকে সাজাতে পারেএতো নির্দশন দেখার পর যারা সঠিক পথে ফিরে আসেনা, পবিত্র কুরআনে তাদের সম্পর্কে বলেছে-

صُمٌّ بُكْمٌ عُمْيٌ فَهُمْ لَا يَرْجِعُونَ
তারা বোবা, কালা ও অন্ধসুতরাং তারা ফিরে আসবে না (বাকারা ১৮)

Faiyaz Al-Muhaimin

২টি মন্তব্য:

  1. আমার একটা প্রশ্ন আছে। কুরান এসেছে প্রায় ১৪৪০ বছর আগে। এসব মডার্ন বৈজ্ঞানিক সুত্র আবিস্কৃত হওয়ার কয়েকশত বছর আগে। মুহম্মদের জামানা থেকেই কুরান পড়া, বুঝা বা অনেক গবেষনা ও হয়েছিল (আজও জারী আছে) প্রশ্ন এখানে, তাহলে মুমিনরা এই সুত্রগুলো প্রথমেই সারা বিশ্বের মানুষের সামনে তুলে ধরেনি কেনো?? তাহলে তখন কি কুরান বুঝতো না মুমিনরা, যা আপনাদের মতো মডার্ন মুস্লিম্রা সাইন্সে খুজে পায়?? তারা আজ বাধ্য হয়ে মডার্ন বিজ্ঞান পড়ে আর সেগুলো"কুরানে খোজে" আর কাকতালীয় ভাবে কুরানের অর্থের অনর্থ করে পুরো মুস্লিম সমাজ কে বোকা বানিয়ে বাহবা কুড়ায়। 🤫
    কুরানেই যদি সব আছে, কুরান থেকে কি কি আবিস্কার করেছে মুমিনগণ আজ পর্যন্ত তার লিষ্ট দেখতে চাই। মনে রাখতে হবে, কুরানে ছিল বললেই হবে না, "আগে কেনো বলেননি" তারও জবাদিহি করতে হবে। কারন আমি জানি "প্রশান্ত মহাসাগরে কতো পানি আছে, বাংলাদেশে কতো কাক আছে"😇... বললেই হবে না, বা ভাষাগত চালাকী উত্তর নিতান্তই জোকারদের কাজ। বিজ্ঞান যৌক্তিক উত্তর খোজে। আশা করি বুঝাতে পেরেছি। ধন্যবাদ!

    উত্তরমুছুন
  2. আমি জানিনা আপনে কতটুকু পড়ালেখা করছেন। তবে আপনাকে আমার অশিক্ষিত মনে হয়। কুরআন মুসলমানদের বিজ্ঞানে নোবেল পাওয়ার জন্য নাযিল হয়নি । কুরআন এসেছে সঠিক পথ দেখাবার জন্য। আর কোনো কিছু সম্পর্কে না জেনে মিথ্যা কথা বলবেন না। কোরআনের অর্থ পালটিয়ে কেউ কিছু বলেনি।তাই অশিক্ষিতেল মতো কথা বলবেননা।আর কুরআন যে সময় নাযিল হয় তখন বিজ্ঞানের যুগ ছিল না । তাই তখন এইসব আয়াত নিয়ে মানুষের মাথা বেথা ছিল না।এখন আপনাদের মতো নাস্তিকরা সৃষ্টিকর্তা নিয়ে question করে তাই মুসলমানরা কুরআনের এইসব বৈজ্ঞানিক আয়াতের মাধ্যমে আপনাদের বোঝাতে চায় ।একটা বিষয় চিন্তা করেছেন এখন বৈজ্ঞানিক প্রমান পাওয়ার পরেও আপনাদের মতো নাস্তিকরা মানতে চায়না কুরআন আল্লাহল বাণী তাহলে শত শত বছর আগে মানুষ কীভাবে প্রমান ছাড়া এই আয়াতগুলো মানত। বিজ্ঞান প্রমান ছাড়া কোনো কিছু মানে না। শত শত বছর আগে কোরআনের এইসব আয়াতের কোনো বৈজ্ঞানিক প্রমান ছিল না । কারন তখন বিজ্ঞান এত উন্নত ছিল না।তখন যদি মানুষকে এই আয়াতগুলো দেখানো হত তাহলে যারা অবিশ্বাসী তারা কোনোভাবেই মানত না।

    উত্তরমুছুন