নিউরোলজির একটি বিখ্যাত রচনা Essentials
of Human Anatomy and Physiology গ্রন্থে বলা
হয়েছে-“পরিকল্পনা আর নড়াচড়া শুরু করার জন্য উদ্বুদ্ধতা আর দূরদর্শিতা মস্তিষ্কের সামনের লোবের (frontal lobe) সম্মুখের অংশে অর্থাৎ Pre-frontal অঞ্চলে ঘটে থাকে। এটি সহযোগী কর্টেক্সের অঞ্চল।”
আরও বলা হয়-"Pre-Frontal অঞ্চলের উদ্বুদ্ধ করার কাজে জড়িত থাকার সম্পর্কে বলতে গিয়ে এটিও
ধারণা করা হয় যে, এই অঞ্চলটি আগ্রাসনের কার্যকর কেন্দ্র । তাই Cerebrum এই অঞ্চলটি পরিকল্পনা, উদ্বুদ্ধ করা আর ভাল ও মন্দ আচরণ শুরু করা এবং সত্য-মিথ্যা বলার জন্য
দায়ী।"
এখন প্রশ্ন হলো-এ ব্যাপারে কুরআন কী বলছে? সূরা আলাক্বের ১৫-১৬ নং আয়াতে আল্লাহ রব্বুল আলামীন বলেন-
كَلَّا لَئِنْ
لَمْ يَنْتَهِ لَنَسْفَعًا بِالنَّاصِيَةِ نَاصِيَةٍ كَاذِبَةٍ خَاطِئَةٍ
কখনই নয়, যদি সে বিরত না হয়, তবে আমি মস্তকের সামনের কেশগুচ্ছ ধরে হেঁচড়াবই। মিথ্যাচারী, পাপীর কেশগুচ্ছ।’
‘মস্তকের সামনের কেশগুচ্ছ’ এ কথাটুকু মনোযোগ সহকারে লক্ষ্য করতে
হবে। এই প্রত্যয়টি
ব্যবহারের মাধ্যমেই আল্লাহ রব্বুল আলামীন মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল অংশকে ইঙ্গিত
করেছেন।
ইবনে কাসিরের মধ্যে এসেছে, এই আয়াতগুলিতে মক্কায় মুহাম্মদ (স)-এর ঘোর শত্রু আবু জেহেলের কথা বলা হয়েছে। কুরআন মাজিদ বলে, সে মিথ্যা বলত এবং
তাকে এমর্মে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে যে, তাকে نَاصِيَ ধরে নিয়ে যাওয়া হবে। نَاصِيَ অর্থ হলো কপাল।
মানুষের মাথার খুলির সম্মুখভাগ frontal
lobe মস্তিষ্কের যে অংশ স্বেচ্ছাচালিত পেশীর আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ
করে তার সম্মুখপূর্ব
অঞ্চল নিয়ে গঠিত। ব্যবচ্ছেদবিদ্যা বিশারদ ও শারীর-তত্ত্ববিদগণ বলেন, পরিকল্পনার প্ররোচনা ও দূরদৃষ্টি এবং প্রাথমিক আলোড়নের ঘটনা
সংঘটিত হয় সম্মুখপূর্ব Cerebrum-এর সম্মুখ (উপরের অংশের) lobeএর পেছনের
অংশে। ডা. শিলি রড তার Essentials of Anatomy
and Physiology (Mosby Year book inc,p,112.st Louis 1966) নামক গ্রন্থে লিখেন, পরিকল্পনার প্ররোচনা ও দৃরদৃষ্টি এবং প্রাথমিক গতি সঞ্চারিত হয় সম্মুখস্ত লবের
পেছনের অংশে, সম্মুখপূর্ব অঞ্চলে। প্ররোচনার ক্ষেত্রে
জড়িত থাকার কারণে সম্মুখপূর্ব অঞ্চলকে আগ্রাসনের কার্যকরী কেন্দ্র বলেও বিবেচনা করা
হয়।
এ থেকে প্রতীয়মান হয়, যখন একজন লোক সত্যকে প্রত্যাখ্যান করে তার জন্য দায়ী
ঐ ব্যক্তির সম্মুখপূর্ব Cerebrum-এর উপরের দিকের lobe-এর পেছনের অংশ। কুরআন মাজিদে এটিকে নির্দেশ করা হয়েছে মিথ্যাবাদী, পাপিষ্ঠ ‘নাসিয়া’ বলে। প্রফেসর কিথ মুর-এর মতে, বিজ্ঞানীরা কেবল বিগত ষাট বছরেই এ বিষয়টি
আবিষ্কার করতে সক্ষম হয়েছে। অথচ আল্লাহ তা’আলা কুরআন মাজিদে এই ঘটনাটি বর্ণনা করেছেন শত শত বছর পূর্বে।
Faiyaz Al Muhaimin
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন