تَبَارَكَ
الَّذِي جَعَلَ فِي السَّمَاءِ بُرُوجًا وَجَعَلَ فِيهَا سِرَاجًا وَقَمَرًا
مُنِيرًا
কত কল্যাণময় তিনি, যিনি নভোমন্ডলে সৃষ্টি করিয়াছেন রাশিচক্র এবং উহাতে স্থাপন
করেছেন সূর্য এবং চাঁদ-যার রয়েছে ধার করা আলো। (সূরা ফুরকান ৬১)
আদি সভ্যতাগুলো বিশ্বাস করতো যে, চাঁদ তাঁর নিজস্ব আলো দেয়। কিন্তু আধুনিক বিজ্ঞান
আমাদেরকে জানায়, চাঁদের আলো হচ্ছে প্রতিফলিত আলো।
কুরআনে সূর্যের জন্য ব্যবহৃত শব্দ হচ্ছে شمس (শামস)। আবার سرجا (সিরাজ) হিসেবেও উল্লেখ
করা হয় যার অর্থ মশাল। এছাড়া (ওয়াহহাজ) হিসেবে উল্লেখিত হয়েছে যার অর্থ প্রজ্জ্বলিত বাতি অথবা ضيا(দিয়া) হিসেবে যার অর্থ উজ্জ্বল জ্যোতি। তিনটি বর্ণনার সবগুলোই সূর্যের জন্য যথোপযুক্ত, কারণ সূর্য অন্তর্দাহের
মাধ্যমে প্রচণ্ড তাপ ও আলো উৎপন্ন করে (Internal
combustion হচ্ছে যে প্রক্রিয়ায় কোন কিছুর অভ্যন্তরে
গ্যাস বা বাষ্পের বিষ্ফোরণের দরুন শক্তি উৎপন্ন হয়)।
قمر (ক্বমার) হচ্ছে চাঁদের জন্য কুরআনে ব্যবহৃত
আরবী শব্দ এবং এটি কুরআনে منير (মুনীর) হিসেবে
বর্ণিত হয়েছে যার অর্থ প্রতিফলিত আলোদানকারী একটি বস্তু। তাছাড়া, চাঁদ হচ্ছে একটি নিষ্ক্রিয় বস্তু, যা সূর্যের আলোকে প্রতিফলিত করে, চাঁদের প্রকৃতিগত এ বৈশিষ্ট্যের সাথে কুরআনে বর্ণিত বর্ণনা
যথাযথ মিলে যায়।[কুরআন ও আধুনিক বিজ্ঞান-ড. জাকির নায়েক]
কুরআনে শুধুমাত্র সূর্যকে ‘সিরাজ’ ‘ওয়াহহাজ’ বা ‘দিয়া’ হিসেবে এবং চাঁদকে
‘নূর’ বা ‘মুনীর’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। বরং কুরআনে চাঁদের আলো ও সূর্যের আলোর বৈশিষ্ট্যের মধ্যে পার্থক্যের দিকেও ইঙ্গিত
করা হয়েছে।
هُوَ الَّذِي
جَعَلَ الشَّمْسَ ضِيَاءً وَالْقَمَرَ نُورً
আল্লাহ তায়ালাই এই সূর্যকে করিয়াছেন তেজস্কর
আর চন্দ্রকে করিয়াছেন পিতিবিম্বিত আলো।
(সূরা ইউনুস ৫)
أَلَمْ تَرَوْا كَيْفَ
خَلَقَ اللَّهُ سَبْعَ سَمَاوَاتٍ طِبَاقًاوَجَعَلَ الْقَمَرَ فِيهِنَّ نُورًا
وَجَعَلَ الشَّمْسَ سِرَاجًا
তোমরা কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ কিভাবে সৃষ্টি করেছেন সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে, এবং সেখানে চন্দ্রকে রেখেছেন আলোরূপে এবং সূর্যকে রেখেছেন
প্রদীপরূপে। (নূহ ১৫-১৬)
চাঁদের আলো যে ‘প্রতিবিম্বিত আলো’ বা ‘ধার করা আলো’ একথাটা দেড় হাজার
বছর আগের একটা বইয়ে আসাটা খুবই স্বাভাবিক, যদি সে বইটা হয়
এমন এক মহাসত্ত্বার রচিত যিনি সকল জ্ঞান-বিজ্ঞানের আঁধার।Faiyaz Al Muhaimin
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন